প্রকাশিত: Mon, Jun 12, 2023 10:53 PM
আপডেট: Sun, Jun 29, 2025 12:50 AM

খোকন সেরনিয়াবাত বরিশালের নতুন নগরপিতা

খুলনা ও বরিশাল সিটিতে নৌকার জয়

এম এম লিংকন, শাহ জালাল: বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। তিনি পেয়েছেন ৮৭ হাজার ৭৫২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৩৪৫ ভোট। এই সিটিতে ভোট পড়েছে শতকরা ৪৫ ভাগ। সোমবার রাতে নির্বাচন কমিশন বেসরকারীভাবে এই ফলাফল ঘোষনা করে। 

এই নির্বাচনে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন কমিশন। সোমবার সকাল থেকেই ভোট গ্রহণের শেষ সময় পর্যন্ত সিসি টিভির মাধ্যমে রাজধানীর নির্বাচন ভবন থেকে বরিশাল সিটির নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে ইসি। 

বরিশাল সিটি করপোরেশনে নির্বাচনে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে নৌকা এবং হাতপাখার পক্ষে থেকে। হাতপাখা প্রার্থী, ইসলামী আন্দোলনের ফয়জুলের ওপর হামলার ঘটনায় নৌকার বিরুদ্ধে অভিযোগের পর এবার হাতপাখার বিরুদ্ধে নৌকার পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। নগরীর ছয়টি ওয়ার্ডে নৌকার সমর্থকদের মারধর, কেন্দ্রে আসতে বাধা প্রধান, নারীদের ধর্মীয় ব্যাখ্যা দিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে নিষেধ করাসহ নানান অভিযোগ উঠেছে হাতপাখার বিরুদ্ধে।

হাতপাখার প্রার্থীর মিডিয়া উপকমিটির সদস্য কেএম শরিয়তুল্লাহ জানান, দুপুরে ছাবেরা খাতুন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার পর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথার কাছে গেলে ৩০/৪০ জন নৌকার সমর্থক আমাদের প্রার্থীর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। লাঠিসোটা ও পাথর  ছুঁড়ে মারতে থাকে। হুজুর (ফয়জুল) ছাড়াও তার সঙ্গে থাকা বেশ কিছু নেতাকর্মী কমবেশি জখম হয়েছেন। হামলায় ফয়জুল করীমের নাক ও ঠোঁট ফেটে যায়। পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।

এ ঘটনায় এই সিটির দায়িত্বে থাকা নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান তাৎক্ষণিক হাতপাখার প্রার্থীর উপর হামলাকারীকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। এ সময় মহানগরীতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে কমিশন তা নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ভোট গ্রহণে কোন বাধা সৃষ্টি হয়নি।  

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরিশাল নগরীর কাউনিয়া মেইন রোডের একটি কেন্দ্রে প্রবেশ করাকে কেন্দ্র করে ফয়জুল করীমসহ দলটির নেতাকর্মীদের ওপর আরেক দফা হামলার অভিযোগ ওঠে।

ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, সকালে কাউনিয়ার মেইন সড়কের এ কাদের চৌধুরী স্কুল কেন্দ্রে হাতপাখার ভোটার ও মানিক মিয়া স্কুল কেন্দ্র থেকে পোলিং এজেন্টকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনা শুনে ফয়জুল করীম কেন্দ্রগুলোতে প্রবেশ করে প্রিজাইডিং অফিসারকে অভিযোগগুলো জানান। এরপর মানিক মিয়া স্কুলের অপরদিকের কাউনিয়া বালিকা বিদ্যালয় ঢুকতে চান তিনি। তখন নৌকার নেতাকর্মীরা হাতপাখার প্রার্থীকে বলেন, কয়েকজন ভেতরে ঢুকতে পারবেন। আপনারা সবাই ঢুকলে আমরাও ঢুকব। তখন হাতপাখার প্রার্থীসহ দলটির নেতাকর্মীদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়।

বরিশাল সিটিতে মেয়র প্রার্থী ছিল সাত জন। এছাড়াও ১১৮ জন সাধারণ ও ৪২ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী ভোটে লড়েছেন। সবমিলিয়ে এই সিটিতে মোট ভোটার দুই লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন। এরমধ্যে এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৮৯ জন পুরুষ ও এক লাখ ৩৮ হাজার ৮০৯ জন নারী ভোটার। ইভিএমের মাধ্যমে মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে ১২৬টি কেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব